তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে রুবানা হকের নেতৃত্বে সম্মিলিত ফোরাম প্যানেল। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ২৬ প্রার্থীর মধ্যে ২৬ জনই বিজয়ী হয়েছেন। শনিবার (৬ এপ্রিল) রাত ৯টার পর ভোটগণনা শেষে বিজিএমইএ’র নির্বাচনি বোর্ডের দায়িত্বে থাকা মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এমসিসিআই) সভাপতি ব্যারিস্টার নিহাদ কবির এই ফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনের এই ফল উভয় প্যানেলই মেনে নিয়েছে। বিজয়ীরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন।
নির্বাচিতরা আগামী দুই বছরের জন্য বিজিএমইএ নেতৃত্ব দেবেন।
উৎসবমুখর পরিবেশে বিজিএমইএ’র পুরনো ভবনে (কারওয়ান বাজার) নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে শনিবার সকাল ৮টা থেকে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট নেওয়া হয়। এরপর বিকাল ৫টায় ভোটগণনা শুরু হয়। এই ভোটের মাধ্যমে আগামী দুই বছরের (২০১৯-২১) জন্য নেতা নির্বাচিত করলেন পোশাক মালিকরা।
বিজিএমইএ’র নির্বাচন পরিচালনা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল এক হাজার ৯৫৬ জন। এর মধ্যে ঢাকার এক হাজার ৫৯৭ জন, বাকি ৩৫৯ জন চট্টগ্রামের। পরিচালক পদে বিজয়ীরা পরবর্তীতে সভাপতি, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ও সহসভাপতি নির্বাচন করবেন।
দুই বছরমেয়াদি এই নির্বাচনে পরিচালনা পর্ষদের ৩৫টি পরিচালক পদে ৪৪ প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। তবে এর মধ্যে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ৯ প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ২৬ পদে ভোটগ্রহণ হয়। এর মধ্যে প্রার্থী সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের ২৬ জন, স্বাধীনতা পরিষদের ১৮ জন। সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরামের নেতৃত্ব দিচ্ছেন মোহাম্মদী গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রুবানা হক। তিনি ঢাকা উত্তর সিটির প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্ত্রী। অন্যদিকে স্বাধীনতা পরিষদের প্যানেল লিডার ডিজাইন অ্যান্ড সোর্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম।
সম্মিলিত পরিষদ-ফোরামের প্রার্থীরা হলেন রুবানা হক, এস এম মান্নান, ফয়সাল সামাদ, মোহাম্মদ নাছির, আসিফ ইব্রাহিম, আরশাদ জামাল, এম এ রহিম, কে এম রফিকুল ইসলাম, মো. শহীদুল হক, মশিউল আজম, ইনামুল হক খান, মাসুদ কাদের, ইকবাল হামিদ কোরাইশী, নাছির উদ্দিন, কামাল উদ্দিন, সাজ্জাদুর রহমান মৃধা, রেজওয়ান সেলিম, মুনির হোসেন, এ কে এম বদিউল আলম, মিরান আলী, মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, মোশারফ হোসেন ঢালী, শিহাব উদ্দোজা চৌধুরী, মহিউদ্দিন রুবেল, শরীফ জহির ও নজরুল ইসলাম।
এই যৌথ প্যানেলের চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ীরা হলেন মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, এ এম চৌধুরী, এ এম মাহবুব চৌধুরী, এনামুল আজিজ চৌধুরী, মোহাম্মদ আতিক, খন্দকার বেলায়েত হোসেন, অঞ্জন শেখর দাশ, মোহাম্মদ মুছা ও মোহাম্মদ মেরাজ-ই-মোস্তফা।
জানা গেছে, ২০১৫ সালে বিজিএমইএ’র নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নেওয়ার পর প্রতিদ্বন্দ্বী দুটি প্যানেল সম্মিলিত পরিষদ ও ফোরাম সমঝোতার মাধ্যমে বর্তমান সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানকে সভাপতি করে একটি পরিচালনা পর্ষদ ঠিক করেছিল। এরপর থেকে আর নির্বাচন না হয়ে তিন ধাপে এ পরিচালনা পর্ষদের মেয়াদ বাড়িয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরপর সিদ্দিকুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর। তখন নির্বাচন না হওয়ায় মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হয়েছিল।
গত ৫ জানুয়ারি ২০১৯-২১ সময়ে নির্বাচনের জন্য পরিচালনায় বোর্ড গঠন করা হয়। গত নির্বাচনের মতো এবারও বিটিএমএ’র সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন নির্বাচনি বোর্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। অপর দুই সদস্য হচ্ছেন এমসিসিআইর সভাপতি নিহাদ কবির ও চট্টগ্রামভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এএসএম নাইম।
Source: banglatribune.com Link to the Original Article